1. news@impactnewsbd.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধার মুখে কর্মস্থলে যোগ দিতে পারেননি নতুন কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টরের পদত্যাগ

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : বুধবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৪
  • ১০৯ বার

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের একাংশের বাধার মুখে যোগদান করতে এসেও ক্যাম্পাস ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ কর্নেল (অব.) আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান। তাঁকে ‘স্বৈরাচারের দোসর’ আখ্যা দিয়ে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের একটি পক্ষ। তাঁর নিয়োগের প্রতিবাদে আজ বুধবারও ক্যাম্পাসে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়েছে।

এদিকে নতুন কোষাধ্যক্ষকে দায়িত্ব নিতে বাধা দেওয়ার ১৫ ঘণ্টা পর আজ বুধবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইন তাঁর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে রেজিস্ট্রার বরাবর তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, প্রক্টরের বিরুদ্ধে তাঁদের কোনো অভিযোগ নেই। নিজের নীতিনৈতিকতা বজায় রাখতে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা। প্রক্টর রাহাত হোসাইন পদত্যাগ করার পর বিকেলে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ টি এম রফিকুল ইসলামকে।

শিক্ষার্থীরা জানান, নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ আবু হেনা মোস্তফা কামাল মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার জন্য আসছেন, এমন খবর পেয়ে রাত ৯টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁর নিয়োগের প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর রাহাত হোসাইনকে জানান, কোনোভাবেই যেন নতুন নিয়োগ পাওয়া কোষাধ্যক্ষ কর্মস্থলে যোগদান করতে না পারেন।

রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের অনুমোদনক্রমে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ পদে আবু হেনা মোস্তফা কামাল খানকে ২৬ নভেম্বর নিয়োগ দেওয়া হয়। তাঁর নিয়োগের খবর প্রকাশ হওয়ার পরই শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়।

আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মোস্তফা কামাল বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) থাকাকালীন সীমাহীন দুর্নীতি করেছেন, যার তথ্য-প্রমাণ বিভিন্ন গণমাধ্যমে উঠে এসেছে। এমন দুর্নীতিগ্রস্ত লোককে তাঁরা বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দেখতে চান না। তাঁরা কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামালকে আওয়ামী লীগের ‘দোসর’ হিসেবে অভিহিত করেন।

আবু হেনা মোস্তফা কামাল খান তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে ভিত্তিহীন দাবি করে আজ বুধবার দুপুরে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ না করে সরাসরি কথা বলুক। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলতে চাই। তারা যেসব অভিযোগ তুলেছে সেগুলো যে ভিত্তিহীন, তা আমি তাদের তথ্য-প্রমাণ দিয়ে জানাতে চাই।’

গতকাল রাতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের পর আজ সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা আবার ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন, যাতে কোষাধ্যক্ষ যোগদান করতে না পারেন। একই সঙ্গে আজ সকাল থেকে শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি অংশ স্বৈরাচারের দোসরদের পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে। এ সময় তাঁরা একটি প্রতিবাদলিপিতে স্বাক্ষর করেন। তাঁদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাদেকুর রহমানসহ ২৩ জন শিক্ষক আছেন।

সহযোগী অধ্যাপক সাদেকুর রহমান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন অধ্যাপককে আমরা কোষাধ্যক্ষ হিসেবে চাই। ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচারের দোসরকে আমরা দেখতে চাই না। জুলাই বিপ্লবকে ধারণ করে একজন সৎ, যোগ্য ও শিক্ষাবিদকে কোষাধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

এই বিষয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোষাধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়েছে সরকার, এতে আমাদের হাত নেই। তিনি মঙ্গলবার রাতে যোগদান করতে এসেছিলেন, কিন্তু শিক্ষার্থীদের বাধার মুখে তা পারেননি। এরপর আজ আমাকে হোয়াটসঅ্যাপে তিনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন মর্মে একটি যোগদানপত্র পাঠিয়েছেন। আজ বুধবার তিনি আর বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেননি।’

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ
© 2024, All rights reserved.
Design By Raytahost